Table of Content

Dr. Romel Sarwar
NA
NA
1 articles

ইম্প্যাক্ট জীবনতরী হাসপাতাল চিকিৎসার ফেরিওয়ালা

লেখক: ডাঃ রোমেল সারোয়ার Category: প্রবন্ধ (Essay) Edition: Dhaboman - Eid 2018

ভাসমান , চলমান বা উড়ন্ত হাসপাতালের ধারনাটা একেবারে নূতন নয় , ১৮৯৪ সালে আমেরিকার বস্টনে একটা ভাসমান হাসপাতাল চালু হয়েছিল , যা এখনো চলছে ।ভারতে ‘ স্মাইল ট্রেন’ নামে একটা আস্ত ট্রেন ,হাসপাতাল হয়ে দেশের আনাচে কানাচে ঘুড়ে বেড়ায় । অরবিস নামের চক্ষু হাসপাতালটি আসলে একটা প্লেন , যা উড়ে উড়ে বিভিন্ন দেশে গিয়ে চক্ষু চিকিৎসা দেয় , বাংলাদেশেও সেই প্লেন এসেছিল ।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ভাসমান হাসপাতালের ধারনাটা দারুন কার্যকরী । নদীতীরবর্তী ও চরান্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষকে আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়াটা একটা অসাধারন ব্যাপার ! 
আর সে কাজটিই করছে ‘ইম্প্যাক্ট জীবনতরী‘ নামের এই ভাসমান হাসপাতালটি। যে মানুষগুলো স্থানীয় সরকারী বা বেসরকারী হাসপাতাল পর্যন্তই পৌছতে পারে না , তাদের জন্য দেশের অভিজ্ঞ বা বিদেশের নামী চিকিৎসকদের চিকিৎসা জুটছে , নামমাত্র বা বিনা খরচে , এটা এক বিশাল ব্যাপার। এমন হাসপাতালের উপযোগিতা আমাদের সমাজে বা দেশে কেমন তা নিশ্চিতই গবেষনার বিষয় , কিন্তু উদ্যোগটা যে অত্যন্ত মানবিক এবং কিছু মানুষের জন্য খুবই উপকারী তা নিতান্তই সত্যি ।
আমার গত দুদিন কাটল জীবনতরী হাসপাতালে দুজন ব্রিটিশ , একজন দক্ষিন আফ্রিকান এবং কয়েকজন বাংলাদেশী চিকিৎসকের সাথে বরিশালের বাবুগন্জে আড়িয়ল খা নদীতে।

(লেখক সর্ব ডানে)

 

 

হাসপাতালটি প্রত্যন্ত এলাকার নদীতীরে ৩-৬ মাস থাকে এরপর নোঙর তুলে আরেক জায়গায় গিয়ে আস্তানা গাড়ে । এটা এর আগে ছিল দোহারের নারিশায় পদ্মা নদীতে আর এখান থেকে যাবে গাজীপুরে শীতলক্ষা নদীতে । এভাবে এমন ৪০ জন নিবেদিত প্রান কর্মী চিকিৎসা ফেরী করে বেড়ায় গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে ।মাঝে মাঝে আমাদের মত কিছু অতিথি চিকিৎসক সাথী হয় তাদের সাথে । আমরা দেখলাম জনা চল্লিশ শিশু , যারা বেশ কিছু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্ম নিয়েছে ।এর মাঝে দুদিনে প্রায় বিশজনের সার্জারী হচ্ছে ।

আয়োজকদের ধন্যবাদ দিতেই হয় এই অতিমানবীয় কাজটা বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে নেবার জন্য ।
এরা শুধু চিকিৎসার ফেরীওয়ালাই নন , 
স্বপ্নের ফেরীওয়ালাও নিশ্চিতভাবেই ।

এপিজে আবুল কালামের মত বলতে হয়..
স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে,
স্বপ্ন সেটাই যেটা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।

বাংলাদেশের এখন প্রয়োজন , 
এমন কিছু স্বপ্নবাজ মানুষের ।