নীল নীলিমায়
ঐ আকাশটাকে ছুঁতে চেয়ে-
নীল নীলিমায় এসে-
বাঁধনহারা চক্রবালে,
মুক্তির উদ্দেশে।
লাগছে কাঁপন শিরায়,শিরায়
মুক্তাকাশের আলিঙ্গনে,
নিবিড় পাওয়ার ব্যাকুলতা
রয়েছে জেগে সংগোপনে।
রামধনু রঙ আলপনাতে
মেঘলা বেলার রেশে-
নীল পাখীদের মুক্ত আকাশ
ডাকছে দিনের শেষে।
বিহগের ওই বিশাল ঝাঁকে
উড়বো বলে ওই গগনে-
একরাশ কল্পনাতে
পাখনা মেলি গহন মনে।
হোথায় চাঁদ,সূর্য খেলছে একা
তারকারাজির মিলনমেলায়-
সীমারেখার ভাঙ্গছে বাঁধন
নীলাম্বরের মুক্তি বীণায়।
চিদাকাশের সব কালিমা-
সেই উদারতায় ধুইয়ে দাও,
নির্জনতায় সাক্ষী থেকে-
আকাশে নাম লিখিয়ে যাও।
গোত্রবিহীন লেখা নাম,
বাজুক প্রেমের মূর্ছনাতে
বর্ণচোরা ভালোবাসায়-
সাজুক নভ অলক্ষেতে।
কেন?
পেঁজা তুলোর শরৎ মেঘে
বাজলো যখন মহালয়ার ঢাক
কাশের বন আর শিউলি গন্ধে
ওই শোনা যায় আগমনীর ডাক।
আগমনীর ডাক শোনা ওই
পথের শিশুর দল
মাকে শুধায় হাজার কেন?
নিয়ে অশ্রুজল।
পূজোর ঢাক বাজলো যখন
পরল সবাই নতুন জামা চুড়ি
কেন তবে মা এমন দিনে
আমরা সব ছেড়া কাপড় পরি?
শিউলি গন্ধে আমরাও যে মা
পূজোর প্রহর গুনি
কেন তবে সেই আঁধার ঘরে
পরেনা দেবীর রাঙা চরণখানি?
রঙিন বাতির রোশনাইতে
আকাশছোঁয়া মহলগুলোয়
যেন জ্বলছে রাতের তারা!
ওদের সাথে মোদের তফাৎ
এমন করে করলে বলো কারা?
যখন মাগো দেখি ওই
ঠোঁটের কোনে তিক্ত হাসি
সেই আঘাতে বুক ভাঙ্গে মা
যেন আমরা অবিশ্বাসী!
কেন মা তুমি নীরবচারী?
মুখটা অমন ম্লান
ভাঙা ঘরে ঠাঁই আমাদের
তাই কি অসম্মান?
ওদের আহার ডাস্টবিনে যায়
শারদীয়ার রাতে।
আমরা তবু অভুক্ত রাত
কাটাই কেমন মলিন ফুটপাতে?
নীল বিষ
নীলগরলের নীলরঙটা
বিষকণ্ঠের ভয়াল সাপ
মারলে ছোবল হঠাৎ বুকে
ফণা তুলে নিরুত্তাপ।
ব্যথাঘন ছলছল জল
বাস্প হয়ে উধাও হোলো
নীলচে বিষের তীব্র দহন
মর্মতলে অগ্নি দিলো।
বাষ্প হওয়া অশ্রুবারি
শষ্পশাখায় বাঁধলো বাসা
বিষের প্রকোপ কম যদি হয়
জাগিয়ে দিতে ভালোবাসা।
সেই নীল বিষের স্পর্শ হতে
নীল আকাশটাও বাঁচলো না আর
লক্ষ যোজন দাঁড়িয়ে দূরে
ধূসর ক্ষত আশংকার।
বিষক্রিয়ার অভিসম্পাত
জনস্রোতে পুঞ্জিভূত
নীলকন্ঠের মন্থন বিষ
লালের নেশায় শিহরিত।
উন্মাদিনী সভ্যতা আজ
হানছে আঘাত আকাশটারে
ফুটো আকাশ বিষবিন্দু
দিচ্ছে ঢেলে আঁজলা ভরে।
বিষের জ্বালায় ডুবন্ত প্রাণ
বিশবাঁও জলের নীচে
অমৃতফল স্বর্ণমৃগ
গরল জানায় অসংকোচে।
বিষকন্যার বন্যা হয়ে
রয়েছি বিষের শয্যা পেতে
নিরন্তর বিষের ঘায়েও
পারছি না তো হারিয়ে যেতে।