বিল গেটস

লেখক: সংগৃহিত Category: কৌতুক (Jokes) Edition: Dhaboman - Winter 2020

বিল গেটস আমেরিকার নাগরিকত্ব ছেড়ে দিচ্ছে।
শেষ বারের মতো মাইক্রোসফটের অফিস ঘুরতে গিয়ে সে হু-হু করে কেঁদে ফেলল। নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যেতে খারাপ লাগারই কথা। বিল গেটসেরও খারাপ লাগছে। সে কান্না থামাতে পারছে না। চোখের পানিতে সার্জিক্যাল মাস্ক ভিজে মুখের সাথে লেগে গেছে।
তবে কাঁদলে কি হবে, মনে মনে কিন্তু বিল গেটস খুবই খুশি। তার লাফাতে ইচ্ছে করছে। এতদিন পর সে তার স্বপ্নের চাকুরী খুঁজে পেয়েছে। এতগুলো বছর সে এমন একটা চাকুরীর চেষ্টাই করছিল। মাঝে মাইক্রোসফট গড়েছে, সেরা ধনী হয়েছে কিন্তু তলে তলে সে সবসময় এই ড্রিম জবের সন্ধান করেছে। ভাগ্য ভালো ফেসবুকে এক বন্ধুর কল্যাণে আগে-ভাগে চাকুরীর সার্কুলারটি তার নজরে এসেছিল। সঙ্গে সঙ্গে সিভি জমা দিয়ে সে প্রার্থনা বসে যায়... হে ঈশ্বর, আমাকে এই চাকুরীটা দাও। তোমার কাছে আমি আর কিচ্ছু চাই না। আমার জীবন সার্থক হবে যদি এই চাকুরীটা আমি পাই। আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না প্রভু।
দোয়ার জোরেই কি না কে জানে! বিল গেটসের কাছে ফিরতি মেইল আসল-তাকে শর্ট লিস্টেট করা হয়েছে। জুম ভিডিও কলে ইন্টারভিউ দিতে হবে। ইন্টারভিউ এর কথা শুনে বিল গেটসের হাত পা কাপা-কাপি শুরু হয়ে গেল। তার এতো বছরের প্রোগ্রামিং এর অভিজ্ঞতা! টেক লাইনে সে বস!
তবুও তার টেনশন হচ্ছিল যদি ইন্টারভিউ খারাপ হয়, যদি চাকুরী তার মিস হয়ে যায়!!!! এই চাকুরী না হলে বিল গেটসের জীবন বৃথা। দুনিয়ার প্রতিটা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, সফটওয়্যার ডেভেলপারদের কাছে এই চাকুরী সোনার হরিণ, আলাদীনের চেরাগ। জুকারবার্গকে নিয়েই সমস্যা, সেও নাকি সিভি জমা দিয়েছে।
কি যে হয় ভাবতে ভাবতে বিল গেটস ইন্টারভিউ দিল। প্রথমেই তাকে প্রশ্ন করলো চর্যাপদের রচয়িতা কে? বিল গেটস জানত এমন প্রশ্নই আসবে, রবীন্দ্রনাথের বিয়ের তারিখ, জীবনানন্দ দাশের পছন্দের তরকারী, মাইকেল মধুসূদন দিনে কয়টা সবরী কলা খেত, এইসব প্রশ্নের উত্তর সে গত এক মাস রাত জেগে মুখস্ত করেছে। সে জানতো তাকে এই প্রশ্নগুলোই করা হবে। বিল উত্তর চটপট দিতে পারল, জুকারবার্গ পারেনি। সে ভেবেছিল তাকে এইচটিএমেল, এলগোরিদম, ডাটা স্ট্রাকচার এইসব নিয়ে প্রশ্ন করা হবে! শালা একটা পিউর বলদ। বিল গেটসের চাকুরী হয়ে গেল।
আজ সে নতুন চাকুরী উদ্দেশ্যে আমেরিকা ছাড়ছে। বিলের বউ আকুল নয়নে কাঁদছে! ওগো, আমায় ভুলে যেও না। স্কাইপিতে কল দিও।
বিল গেটস হাসল। টাইম পাইলে দিমুনি। বলেই সে স্যুটকেস টানতে-টানতে সোজা এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরল। কিছুক্ষন পর সে খেয়াল করল, বিল গেটস দৌড়াচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব সে প্লেনে উঠতে চায়। চাকুরীতে জয়েন করতে চায়। এই চাকুরীর জন্য সে আমেরিকা ছাড়ছে, মাইক্রোসফট ছাড়ছে, সংসার ছেড়েছে। এই চাকুরী তার সবে ধন নীলমনি।
এয়ারপোর্টে এসে বিল গেটস দেখল সাংবাদিকরা ভিড় করে আছে! সবাই কৌতূহলী হয়ে জানতে চাইছে...ভাই, সব ছেড়ে ছুঁড়ে আপনি কই যান? বিল গেটস দাঁত কেলাতে কেলাতে উত্তর দিল - উগান্ডার (?!) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট মেইন্টেইনেন্সের দায়িত্ব পেয়েছি।
------------
সম্পূরক খবরঃ
চারটি ওয়েবসাইট উন্নয়ন করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খরচ ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
পাঁচটি ডাটা-বেজ তৈরিতে খরচ হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
পাঁচটি কম্পিউটার সফটওয়্যার কেনায় খরচ ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা।
 
(মবিনুল ইসলামের ফেসবুক পাতা থেকে নেয়া)