তারিখটা এখন ঠিক মনে করতে পারছি না,তবে সেটা হবে খুব সম্ভবত সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ। ১৯৮৭ সাল। আমরা যখন বেইজিং এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছলাম তখন পড়ন্ত বিকেল। শীতের বিকেলের যে একটা ধূসর পর্দা থাকে সেটা সেই প্রথম টের পেলাম। ব্যাংকক থেকে যখন আমরা থাই এয়ার লাইন্সের বিমানে উঠি তখন সেখানে ছিল গায়ের চামড়া পুড়ে যাওয়ার মত গরম। আর বেইজিং এয়ারপোর্টে প্লেন থেকে যখন বের হই তখন হিমেল এক বাতাসের স্পর্শ যেন হৃদপিণ্ড পর্যন্ত নাড়া দিয়ে গেল। আমি ঢাকার ছেলে হলেও লেখাপড়া করেছি উত্তরবঙ্গের রংপুর ক্যাডেট কলেজে।

ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হজ্জ, যা কিনা শারীরিক এবং আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান সকল মুসলিম নরনারীর জন্য ফরয। বিশ্বব্যাপী কোভিডের প্রকোপ প্যান্ডেমিকের আকার ধারণ করার কারণে গত বছর খুবই সীমিত আকারে পবিত্র হজ্জ পালিত হয়েছে। সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রায় শ'খানেক বাছাইকৃত হাজীদের দ্বারা এই হজ্জ পালিত হয়।

সেদিন হঠাৎ করেই 'বৃক্ষকথা' নামক ফেসবুক গ্রুপের একটি পোষ্টে চোখ আটকে গেল। পোষ্টটি ছিল রংপুর ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেটদের করা দৃষ্টিনন্দন একটি বাগান নিয়ে। বাগানের সেই ছবি আমাকে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা কিংবা দূর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিল। অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, মাঝে এতগুলো বছর পেরিয়ে গেছে অথচ মনে হচ্ছে এইতো সেদিনের কথা। তখন আমরা ক্লাস নাইনে পড়ি। হঠাৎ করেই কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত, আমাদের হাউজ বিল্ডিং-এর সামনে যে বিশাল লন আছে সেখানে বাগান করতে হবে।

পুরানো এক বাংলা নাটকের নাম থেকে লেখাটির নামকরণ। নাট্যকারের নাম যেমন মনে নেই, তেমনি মনে নেই নাটকের কাহিনীও। তারপরও কেন শিরোনাম 'শাহজাদীর কালো নেকাব', লেখাটি পড়লেই তা পরিস্কার হবে। এ বছর পবিত্র হজ্জ পালন করার সময় নিকাব নিয়ে ব্যক্তিগত একটি অভিজ্ঞতাই এই লেখাটির প্রতিপাদ্য।

সমস্যাবিহীন জীবন মানুষ কখনোই যাপন করেনি। সভত্যার সেই ঊষা লগ্ন থেকেই সমস্যা মানুষের নিত্য সঙ্গী। কালের বিবর্তনে এই সমস্যার প্রকৃতি হয়ত বদলিয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবন কখনোই কিংবা কোন যুগেই সমস্যা মুক্ত হয়নি।

আমাকে শুধরে দিতে চেষ্টা করেছিলো আমার এক বন্ধু। তার যুক্তি ছিলো মুসলমানদের ভেতর কোন প্রভেদ নেই। নেই কোন জাতি কিংবা জাতীয়তার বিভেদ। সবারই একটাই পরিচয়। আমি অবশ্য তার সাথে এই জটিল বিষয় নিয়ে বিতর্কে যাইনি। তার সাথে কথা বলছিলাম চাইনিজ মুসলিমদের নিয়ে, আমার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে।

১লা জুলাই, ২০০৬ - 'কানাডা দিবস'-এর শেষ বেলায় আমরা টরেন্টোর পিয়ারসন্স এয়ারপোর্টে এসে পোঁছাই। টরেন্টো শহরে এই আমাদের প্রথম আসা - তাও আবার একেবারে তল্পিতল্পাসহ। পোর্টারের সাহায্য নিয়ে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস পেরিয়ে যখন অ্যারাইভাল লাউঞ্জে এলাম, বাইরে তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।

আমি তখন টরেন্টোর ডাউন টাউনে অবস্থিত একটি সফটওয়্যার স্টার্ট-আপ কোম্পানীতে কাজ করি। আমদের কোম্পানীর প্রোডাক্ট হচ্ছে এক ধরণের 'ডিসিশনিং ইন্জিন' সফটওয়্যার যেটা ফিনান্সিশাল ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহৃত হয়। আর্থিকভাবে সুলভ এবং সহজ ব্যবহারবিধি, এই দুই বিশেষণের কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের ক্লায়েন্টদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।